মৃত্যু আর সংক্রমণ এর ত্রাসে অনিশ্চিত দিন। সাক্ষাত নেই অনেকের । গল্প- আড্ডা – হৈচৈ – ভ্রমণ । নাই হয়ে গেছে । স্বাভাবিক দিন , স্বাভাবিক সন্ধ্যা কতদূর ? ঘরের ক্ষুদ্র গন্ডি । সদর দরজা পার হলেই মুখোশ। লিফটের বাটন- গাড়ির হাতল। চায়ের পেয়ালা – টেবিল- ফাইল পত্তর। কোথায় যে থাকে অণুজীব ? পকেটে থাকা স্যানিটাইজার । বের করি বারবার । আর হাত মুছি। মুছতেই থাকি। ফোন , ম্যাসেজ, হোয়াটসএপ, ইনবক্স। কখন যে আসে কোন দুঃসংবাদ!!!
যদিও নগর জমে উঠেছে আবার । মানুষ- সড়ক- কোলাহল- বিকিকিনি সরগরম। রাস্তার ধারে টং এর দোকান । চায়ের পেয়ালায় চুমুক । ক্লান্ত শ্রান্ত মানুষের চাঙ্গা হয়ে ওঠা। জীবন থেমে নেই । থাকেও না। শিক্ষিত মধ্যবিত্তের শংকা। উচ্চবিত্ত ত্রস্ত। জীবন ও জীবিকার টানে বের হতেই হচ্ছে । উপায় নাই।
থাকে যারা দূর পরবাসে । স্বজন এর মুখ এখন জীবন্ত ছবি তাদের । ভার্চুয়াল জগত । মিটিং ভার্চুয়াল । যোগাযোগ ভার্চুয়াল । শ্রেণীকক্ষের ক্লাস ভার্চুয়াল । মাঠে খেলা নেই । আছে কম্পিউটার । গেম। টিভি – সিনেমা- গান । ফেসবুক- নেটফ্লিস্ক- আইফ্লিস্ক- প্রাইম কত আর ?
ক’দিন খুব আগ্রহ ছিল। প্রতিদিন এর সংক্রমণ কত? মৃতের সংখ্যা বেড়েছে না কমেছে? আগ্রহ জাগেনা আর।
হাসপাতাল – অক্সিজেন- হাইফ্লো – রেমডিসির। কাঁহাতক? বেশ ক’দিন চোখ খুঁজে বেড়াত ভ্যাকসিন এর সংবাদ । ট্রায়াল আর ট্রায়াল । শেষ হয়েও হয়না শেষ । বই এর পাতাগুলো ঝরা পাতার মত মনে লয়।
মন্ত্রণালয়- ডিজি – নকল মাস্ক – শাহেদ – সাবরিনা- কেচ্ছা আর কেচ্ছা। গুষ্ঠীর পিন্ডি চটকানো। বন্যার পানি বাড়ে কমে। সীমান্তে গুলি । ট্রানজিট- করিডোর – মাশুল – দেশপ্রেম- দেশবিক্রী। সব তুচ্ছ মনে হয় । সব শূন্য মনে হয় । প্রাণময় জীবন প্রাণহীন মনে হয় । সব ঢেকে যায় । সবকিছু । মুখোশ আর মুখোশ । সব আড়াল হয় ।
নিঃসঙ্গতার চাদর শবের চাদর হয়ে কফিন বন্দী হয় । জীবন ছন্দ হারালে তা কী শবের অধিক হয়? অনাগত ভবিষ্যতের আশায় জীবন্ত শব হয়ে ঘুমিয়ে পড়ি চক্রাকারে । কফিনের ঘুম কী এমনই হয়? জানিনা । আমি এসবের কিছুই জানি না।
জুলাই ২৯, ২০২০