তারুণ্যের প্রতিবাদ দেয়ালে: এথেন্সে গ্রাফিতি

জুন ১৪, ২০২৩

বড়, ছোট, মাঝারি যে কোন খালি দেয়ালে আপনি পেয়ে যাবেন গ্রাফিতি। কোথাও লেখা, কোথাও বিমূর্ত ছবি, কোথাও প্রতীকী চিত্র, কোথাও কোথাও নজরকাড়া শিল্প। নাম লিখে রাখা, নিজের চিহ্ন প্রকাশ করা, বিমূর্ত বা মূর্তভাবে কোন চিন্তা প্রকাশ করা নানান গ্রাফিতি। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাড়ি, বন্ধ দোকানের শাটার, সড়কের বড় ছোট পিলার, এমনকি দাঁড়িয়ে থাকা আস্ত গাড়ি, সরকারী ভবন বা ব্যাংক যা অপেক্ষাকৃত সুরক্ষিত, কারো নিস্তার নাই গ্রাফিতি আর্টিস্টের খপ্পর থেকে।

গত শতকে সত্তরের দশকে নিউইয়র্ক শহরে শুরু হয়েছিল নতুন করে গ্রাফিতির জনপ্রিয়তা। আমেরিকার অন্যান্য শহর ছাড়িয়ে ইউরোপ হয়ে এখন দুনিয়ার অনেক দেশেই গ্রাফিতি জনপ্রিয়।


যদিও বলা বাহুল্য, পৃথিবীর সকল সভ্যতার আাদিকাল থেকেই মানুষ রেখে যেতে চায় তাঁর উপস্থিতির চিহ্ন। তার কামনা, বাসনা, ক্ষোভ, ভালবাসা থেকে শুরু করে নিজের নাম অথবা প্রিয়জনের নাম কিংবা ছবি মূর্ত বা বিমূর্তভাবে মানুষ প্রকাশ করে গেছে, সে অর্থে গ্রাফিতির ইতিহাস সভ্যতার সমান পুরনো।

গ্রীসের সর্বশেষ অর্থনৈতিক বিপর্যয় সকলেই জানেন। এখনো পুরোপুরি সে সংকট কেটে গেছে তা বলা যাবেনা। বেকারত্ব ও মজুরি হ্রাসে ক্ষুব্ধ তারুণ্যের ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে এথেন্সে তরুণেরা গ্রাফিতি বেছে নিয়েছে। নগর কর্তৃপক্ষ খুব কঠিন ও গুরুতর অপরাধ হিসেবে এদিকে কড়া নজর দেননা। যদিও কারো ব্যক্তিগত প্রপার্টিতে বিনানুমতিতে কিছু এঁকে দেয়া অপরাধ হিসেবে সর্বত্র বিবেচিত আইনানুগভাবে। বরং গ্রাফিতি কতটা জনপ্রিয় শিল্প মাধ্যম হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে তা বোঝা গেল, আমি যে এপার্টমেন্টে থাকছি কয়েকটা দিন, সে এপার্টমেন্টের ভেতরে ও বাইরে কর্তৃপক্ষ নিজেরাই আাঁকিয়েছেন গ্রাফিতি।

এথেন্স এখন গ্রাফিতি আর্টিস্টদের স্বর্গ। নবীন আাঁকিয়ে যিনি নিজের নাম জানান দিতে চান, ক্ষুব্ধ তারুণ্যের ক্ষোভের প্রকাশ রাখতে চান নি, আর শিল্পের জন্যই শিল্প করতে চান যিনি, তাদের প্রত্যেকর জন্য এথেন্স হয়ে উঠেছে কাঙ্ক্ষিত।

কিছু গ্রাফিতির ছবি দেয়া হল। এটা প্রতিনিধিত্ব মূলক হতে পারেনা। সারা এথেন্স নগরীর লক্ষ লক্ষ গ্রাফিতি অজস্র দেয়াল ভরিয়েছে, তা নিজেই একটা গবেষণা ও ব্যাপক বিশ্লেষণ এর দাবী রাখে।