ফিলিস্তিনের পাশে লন্ডনের নাগরিক সংহতি

মার্চ ১৭, ২০২৪

লন্ডন নগরীতে আজ ফিলিস্তিন সংহতি সাইকেল মিছিল চোখে পড়ল। ট্রাফালগার স্কয়ারে আকষ্মিক এ মিছিল এর সাক্ষাত মিলল। বিষ্ময়ের ঘোর কাটিয়ে ওয়েস্ট মিনস্টার এর দিকে হাঁটছিলাম। কাছেই দেখলাম রাস্তায় বড় একটা ট্রাক সজ্জিত। বড় সাউন্ড সিস্টেম লাগানো হচ্ছে। কর্তব্যরত পুলিশের সাথে কথা বললাম। জিজ্ঞেস করলাম কী হচ্ছে এখানে? তিনি জানালেন, আজ বিকেলে দশ হাজার মানুষের সমাবেশ হবে। ট্রাকের উপর বসে আছে একদল কালো তরুণের দল। বিষ্ময় বাড়ছে। ওয়েস্ট মিনস্টার এভিনিউতে হেঁটে চলেছি। সোস্যালিস্ট ওয়ার্কার্স পার্টি ( ট্রটস্কি পন্থী কট্টর স্ট্যালিন বিরোধী) ফুটপাথে দুটি সুন্দর অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়েছে। প্রবীণ, মধ্য বয়েসী, ও তরুণ কয়েকজন ভলান্টিয়ার তাঁদের পত্রিকা, বই বিক্রি করছেন। সাম্রাজ্যবাদ ও জায়নবাদ বিরোধী নানান শ্লোগান আর পোস্টার সাঁটানো তাতে। ফিলিস্তিনীদের সমর্থনে স্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন। আমরাও শরীক হলাম। হোয়াইট চ্যাপেল ট্রেন স্টেশন থেকে বেরিয়েই পেলাম ভিন্ন আর একটা বামপন্থী দলের বেশ কিছু তরুণ তরুণী ইসরায়েলী আগ্রাসন ও হত্যার বিরুদ্ধে পোস্টার, পত্রিকা, ব্যানার নিয়ে বসেছেন। বক্তব্য দিয়ে মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের “হিজ মাস্টার্স ভয়েস” হয়ে ওঠা ব্রিটিশ শাসকদের নির্লজ্জভাবে ইসরায়েলী দখলদারিত্বকে সমর্থন জানানো স্বত্বেও সাধারণ ব্রিটিশ নাগরিকদের স্বতঃস্ফূর্ত ও সংগঠিত প্রতিবাদ আমাদের আশাবাদ বাঁচিয়ে রাখে মানুষের উপর। মানুষের সংগ্রামের উপর।

ফিলিস্তিন মুক্ত হোক। শেষ করি মাহমুদ দারবিশ এর কবিতা দিয়ে।

‘তুমি যখন তোমার সকালের নাস্তা বানাও —অন্যদের কথাও ভাবো
কবুতরগুলোকে খাওয়াতে ভুলো না।
তুমি যখন যুদ্ধের প্রস্তুতি নাও —অন্যদের কথাও ভাবো
যারা শান্তি চায় তাদের ভুলে যেয়ো না।
তুমি যখন পানির বিল দিতে যাও —অন্যদের কথাও ভাবো
যাদের পান করার জন্য মেঘ-বৃষ্টি ছাড়া আর উপায় নেই।
তুমি যখন ঘরে ফেরো, তোমার নিজের ঘরে —অন্যদের কথাও ভাবো
যারা ফুটপাতে থাকে তাদের ভুলে যেয়ো না।
তুমি যখন ঘুমাতে যাও আর আকাশের তারা গোনো —অন্যদের কথাও ভাবো
এমন মানুষ তো রয়েছে যাদের ঘুমানোর জায়গা নেই।
তুমি যখন মুক্তমনে আনন্দে পথ চলো —অন্যদের কথাও ভাবো
যারা তাদের কথা বলার অধিকারটুকুও হারিয়েছে।
তুমি যখন সবাইকে নিয়ে এতো চিন্তা করো —নিজের কথাও একটু ভাবো
বলো, ‘আমি যদি অন্ধকারে একটি মোমবাতি হতাম!’