ফ্লোরিডা : আমেরিকায় প্রথম স্প্যানিশ বসতি

এপ্রি ৩, ২০২৪

২ এপ্রিল, ১৫১৩ ফ্লোরিডার মাটিতে প্রথমবারের মত প্রথম কোন ইউরোপীয়ানের আগমন। জুয়ান পঞ্চ ডি লিওন নামের একজন স্প্যানিশ ছিলেন এদের অগ্রপথিক। ২ এপ্রিল ছিল ইস্টার এর সময়কাল। স্প্যানিশরা Easter কে বলে Pascua Flotida ( Festival of Flowers)। তার সাথে ফ্লোরিডার চমৎকার ফুল আর ল্যান্ডস্কেপ এর সাথে মিল রেখে এ নামকরণ।

তবে আরো ১৪০০০ বছর আগেই এখানে আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের বসবাস। দীর্ঘ পরিক্রমায় আমেরিকার অন্যান্য অংশে যেখানে ইংলিশ ও আইরিশরা দখল নেয় তারা ক্রমশঃ হাত বাড়ায় ফ্লোরিডায় এবং অবশেষে এটাকেও আমেরিকার অংশ হিসেবে একীভূত করে।

মাত্র ২ কোটি ১০ লক্ষ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ রাজ্যের প্রধান আয় হল পর্যটন খাত। একদিকে আটলান্টিক আর অন্যদিকে গাল্ফ অব মেক্সিকো। আমেরিকার দীর্ঘতম সৈকত ফ্লোরিডায়। যা টেনে নিয়ে আসে সুবিপুল দেশী বিদেশি পর্যটক। ফ্লোরিডার পর্যটকেরা বছরে ১২২ বিলিয়ন ডলার যোগান দেয় ফ্লোরিডার অর্থনীতিতে। আর ২০ লক্ষ লোকের কাজের সুযোগ তৈরি করে। দীর্ঘ সৈকত এর পাশাপাশি এতে রয়েছে ডিজনিল্যান্ড, নাসা’র কেনেডি স্প্যাস, ইউনিভার্সাল স্টুডিও, অজস্র সমুদ্র সংলগ্ন আবাস, সাড়ে চার হাজার দ্বীপ, আরো অজস্র । আমেরিকার বৃদ্ধরা আবাসস্থল হিসেবেও একে পছন্দের তালিকায় রেখেছেন শীর্ষে। অপেক্ষাকৃত উষ্ণ স্থান হিসেবে।

খুবই কাকতালীয় ভাবে, ১ এপ্রিলে আমরা এসেছি ফ্লোরিডায়। আর আজ ২ এপ্রিল আমরা গেলাম মায়ামী সৈকতে। হাজারে হাজারে নর নারী সমুদ্র সৈকতে উত্তাপ নিচ্ছেন। জলকেলি করছেন। বেলুনে চড়ে আকাশ উড়ছেন । চুপচাপ নিশ্চুপ নয়। তবে উচ্চ শব্দ ও কোনরূপ পীড়ন নেই। সৈকত সংলগ্ন সড়কে সাইকেল আরোহী ছুটে চলছেন। স্বাস্থ্য সচেতন নর নারী দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। কারো কোন প্রাইভেসিতে হাত নেই। দোকানী তার পশরা সাজিয়ে দোকানে। কারো চেয়ারের পাশে এসে জবরদস্তি নেই। ফেরার পথে দেখা হল স্ব ভূমি হারানো আদিবাসীদের আবাস Indian Village।

ব্যয়বহুল সবকিছুই। গাড়ি পার্কিং থেকে হোটেল বুকিং। খাবার থেকে পণ্য। এ রাজ্যে আবার ১৩ লক্ষ কিউবান এর বসবাস। রাস্তায় দেয়াল লিখন। বুটের তলায় কিউবান পতাকা। কিউবার জনগণের স্বাধীনতা চাই। তাও আাবার লিটল হাভানা নামে খ্যাত মায়ামী শহরের একাংশে!

ফ্লোরিডা ঠান্ডা নয়। গরমও নয়। সমুদ্র সংলগ্ন শহরে সব রকমের আরাম আর নিরুপদ্রব আনন্দ উদযাপন এর ব্যবস্থা এ রাজ্যকে দিয়েছে ডলারের অফুরান যোগান। বলা বাহুল্য, এ শহরে শুধু মানুষ আসেনা। মানুষের পিছু ধেয়ে আাসে ভয়ংকর ড্রাগসও।

তবুও, পর্যটন নির্ভর করেই একটা অর্থনীতি কোথায় পৌঁছাতে পারে দেখি, আর ভাবি। আমার প্রিয় মাতৃভূমির যে চট্টগ্রামে আমি বাস করি আর ফি বছর কক্সবাজার যাই, সে শহরে প্রায় ১০০ ডলার পরিমাণ হোটেল ভাড়া নেয় যে হোটেলগুলো, বিনিময়ে কী দেয় আমাদের?

এমনকি ৩০ বছর আগে আমাদের কক্সবাজারে যেটুকু হাঁটার আর শ্বাস নেয়ার সুযোগ ছিল তাও কী আমরা রেখেছি? পর্যটকের গলা চেপে টাকা নেয়া হয়, কতটুকু পায় পর্যটক? আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি কবে আমাদের হবে? একটু পীড়া দেয় তো!

অনেক তথ্য সূত্র গুগলের। ছবিগুলো আমাদের।